রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪০ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেস্ক:
চলতি বছরের সউদী অংশের বর্ধিত ব্যয়ের অর্থ যোগাতে বিপাকে পড়েছেন হজযাত্রীরা। গত ১২ মে হাব ঘোষিত বেসরকারি হজ প্যাকেজ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকার সাথে সউদী অংশের ব্যয়ের আরো ‘ডি’ ক্যাটাগরি ৬২ হাজার ৩৭৬ টাকা ২১ পয়সা যোগ করতে হবে। ‘সি’ ক্যাটাগরিতে প্রায় ৮৯ হাজার টাকা যোগ করতে হবে, তবেই হজে যাওয়া নিশ্চিত হবে। গতকাল বুধবার রাতে হাবের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মক্কা আল মোকাররমা বাংলাদেশ হজ অফিসের কাউন্সেলর (হজ) মো. জহিরুল ইসলাম মঙ্গলবার রাতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত চিঠিতে জানিয়েছেন, মিনা-আরাফা-মুজদালেফায় সার্ভিস চার্জের চারটি প্যাকেজ নির্ধারণ করেছে দক্ষিণ এশীয় মোতাওয়িফ কোম্পানী (মোয়াসসাসা)। চারটি প্যাকেজের মধ্যে প্যাকেজ ডি ইতোমধ্যে ই-হজ সিস্টেমে আপলোড করা হয়েছে।
প্যাকেজ ‘এ’ ‘বি’ ও ‘সি’ গতকাল পর্যন্ত ই-হজ সিস্টেমে আপলোড করা হয়নি। প্যাকেজ ‘এ’ ও ‘বি’ অদ্যাবধি নির্ধারণ করা হয়নি। প্যাকেজ ‘সি’ চূড়ান্ত করা হয়েছে ৬ হাজার ৮০৬ সউদী রিয়াল। ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ প্যাকেজ ‘ডি’ ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৬৫৬ দশমিক ৮৭ রিয়াল এবং প্যাকেজ ‘সি’ ৬ হাজার ৮০৬ রিয়াল। হজ ভিসা ফি ৩শ’ রিয়াল এবং ইনস্যুরেন্স ফি ১ হাজার ৯ দশমিক ২৫ রিয়াল। এদিকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন মঙ্গলবার হজ মৌসুমে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী প্রতি ৩ লাখ ৪ হাজার ৩০২ টাকা ১৫ পয়সা সমপরিমাণ সউদী রিয়াল এজেন্সির স্ব স্ব আইবিএএন এর মাধ্যমে সউদী আরবে প্রেরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে।
ওদিকে, ঢাকাস্থ সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ গতকাল একটি কনসালটেন্সির মাধ্যমে ১৬টি হজ এজেন্সির জমাকৃত পাসপোর্টে মুনাজ্জেম ভিসা ইস্যু না করেই ফেরত দিয়েছে। এতে মুনাজ্জেম ভিসা না পাওয়ায় এজেন্সির মালিকরা মক্কা-মদিনায় হজযাত্রীদের বাড়িভাড়া করতে সউদী যেতে পারছে না। যথাসময়ে মক্কা-মদিনায় বাড়িভাড়া সম্পন্ন করতে না পারলে আগামী ৫ জুন থেকে প্রথম হজ ফ্লাইট কীভাবে পরিচালিত হবে তা নিয়েও চিন্তার বিষয় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৩ অথবা ৪ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে হজ ক্যাম্প উদ্বোধন করবেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ থেকে এবার হজ ফ্লাইট ৩১ মে শুরুর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সউদী আরবে প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় ৫ জুন তা শুরু হবে। এ বছর হজ পালনে বাংলাদেশ থেকে সউদী আরবে যাবেন ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন মুসল্লি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার বাকি সব বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাবেন।
মহামারির কারণে দুই বছর পর বিদেশিরা এবার হজে যেতে পারছেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৮ জুলাই পবিত্র হজ হবার কথা। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভ উদ্যোগের আওতায় এবার হজযাত্রীদের সউদী আরবের ইমিগ্রেশন ঢাকায়ই সম্পন্ন হবে, ফলে তাদের সেখানে গিয়ে আর বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না। গতকাল বিকেলে হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হকের সাথে তার দফতরে হজ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করেছেন। হাব নেতৃবৃন্দ সউদী অংশের বর্ধিত ফি যাতে হজযাত্রীরা দ্রুত পরিশোধ করেন এ লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা দেয়া এবং রিপ্লেসমেন্টের সময় বর্ধিত করার অনুরোধ জানিয়ে ধর্ম সচিবের কাছে চিঠি দিয়েছেন। এর আগে গতকাল সকালে আটাব হজ স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন মিন্টু ও আটাব মহাসচিব আবদুস সালাম আরেফ ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সাথে তার দফতরে দেখা করে অতিরিক্ত হজ কোটা পূরণে সিরিয়াল অনুযায়ী বন্টন, হজ এজেন্সিগুলোকে একটি করে বারকোড প্রদান এবং হজ প্যাকেজ ৪৫ দিনের পরিবর্তে ২৫ থেকে ৩০ দিন নির্ধারণের জোর দাবি জানান। মন্ত্রী এসব বিষয় দেখবেন বলে আশ্বাস দেন।